Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

মাটি ও পানির ভৌত-রাসায়নিক গুণাগুণ এবং বাগদা চিংড়ির রোগ প্রতিরোধে কাঁটা শ্যাওলার প্রভাব

চিংড়ি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী রপ্তানি পণ্য। দেশের মোট উৎপাদিত চিংড়ির বেশীরভাগই উৎপাদিত হয় দেশের উপক‚লীয় অঞ্চলে বিশেষ করে বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরায়। সত্তর দশকের শুরু থেকেই মূলত উপক‚লীয় অঞ্চলের চাষীরা সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ শুরু করে। নব্বই দশকের পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় আধানিবিড় পদ্ধতিতে চাষ শুরু হলেও বর্তমানে অধিকাংশ চাষীই সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করে থাকে। যেহেতু এ অঞ্চলের অধিকাংশ ঘেরেই সনাতন পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে, তাই এ পদ্ধতির প্রচলিত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মানোন্নয়ন করা গেলে  এ পদ্ধতিতেই বিদ্যমান সমস্যাগুলো কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে মাটি ও পানির ভৌত রাসায়নিক গুণাগুণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। চিংড়ি পুষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য পানি থেকেই মূল খাদ্য গ্রহণ করে। মাটিই সে পানিকে ধরে রাখে এবং পানিতে চিংড়ির প্রাথমিক খাদ্য তৈরীর জন্য যাবতীয় পুষ্টি উপাদান মাটি থেকে পানিতে মেশে। পানির ভৌত-রাসায়নিক গুণাগুণ এবং উৎপাদনশীলতা মাটির উপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল । তাই পুকুরের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং চিংড়ির স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধিতে  মাটি ও পানির ভৌত রাসায়নিক গুনাগুণ যৌথভাবে ভুমিকা পালন করে। এটি চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরাসরি প্রভাবক হিসেবে কাজ করে এবং ঘেরের সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য পরস্পরের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। ঘেরে উৎপাদিত বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ  মাটি-পানির ভৌত রাসায়নিক গুনাগুণের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে কিছু জলজ উদ্ভিদ চিংড়ি চাষে উপকারী এবং কিছু জলজ উদ্ভিদ চিংড়ি চাষে ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের চিংড়ি চাষকৃত এলাকায় ঘেরের লবনাক্ত কিংবা কম-লবনাক্ত পানিতে প্রচুর পরিমানে এমনই এক ধরণের জলজ উদ্ভিদ দেখতে পাওয়া যায় যেটি স্থানীয় চাষীদের মাঝে  কাঁটা শ্যাওলা নামে পরিচিত। অনেক চাষীদের ধারণা এই শ্যাওলা ঘেরে থাকলে চিংড়ির উৎপাদন ভালো হয়, তাই তারা এই শ্যাওলাকে লক্ষী শ্যাওলা নামেও ডাকে। অন্যদিকে এর বিপরীত ধারণাও রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এসব ধারণার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই ; ফলে চাষীরা ঘেরে কাটা শ্যাওলার ব্যবস্থাপনার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত থাকে এবং বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিডঁউটের  চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র, বাগেরহাট হতে গবেষণা শুরু করা হয়। চিংড়ির ঘেরের পানি, মাটি এবং চিংড়ির স্বাস্থের উপর কাঁটা শ্যাওলার প্রভাব রয়েছে কিনা, থাকলে কি মাত্রায় রয়েছে এবং তা চিংড়ির উৎপাদনে কি প্রভাব ফেলে তার একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি দাঁড় করানোই এই গবেষণার উদ্দেশ্য।